শুধু মসুর ডাল মুখে দিলে কি হয়
শুধু মসুর ডাল মুখে দিলে কি হয় এই প্রশ্ন দীর্ঘদিনের। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন শুধু মসুর ডাল মুখে দিলে কি হয়। তাহলে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই শুধু মসুর ডাল মুখে দিলে কি হয় সে সম্পর্কে যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হতে পারবেন বিশেষ করে যারা রূপচর্চায় আগ্রহী তাদের জন্য। এছাড়াও মসুর ডালের মুখে ব্যবহার বিষয়টি আমাদের সকলেরই জেনে রাখা প্রয়োজন। তাহলে চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
পোস্ট সূচিপত্রঃ শুধু মসুর ডাল মুখে দিলে কি হয়
ভূমিকা
আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারবেন শুধু মসুর ডাল মুখে দিলে কি হয় এই বিষয়টি। এর পাশাপাশি মসুর ডাল ও মধুর ফেসপ্যাক এবং মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা সহ মসুর ডালের আরো উপকারী দিক সম্পর্কেও জানতে পারবেন। এ বিষয়গুলো জানার জন্য আপনাকে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। এছাড়া এ আর্টিকেলে আরো অনেক বিষয় আলোচনা করা হবে যে বিষয়গুলো আমাদের প্রত্যেকের জন্যই জানা গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে আশা করছি আপনি একজন পাঠক হিসেবে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন এবং মসুর ডাল সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান লাভ করবেন। চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় চলে যাই।
মসুর ডাল ও মধুর ফেসপ্যাক
এখন আমরা মসুর ডাল ও মধুর ফেসপ্যাক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেব। আমরা সকলেই মুখকে পরিষ্কার রাখার জন্য কত কিছুই না ব্যবহার করে থাকি। এর কোনোটি কাজে দেয় আবার কোনোটি দেয় না। কিন্তু আপনি কি জানেন মসুর ডাল এবং মধু দিয়ে বাড়িতে ফেসপ্যাক তৈরি করে আপনি আপনার ত্বককে পরিষ্কার রাখতে পারেন। অনেকে আছে যে বিষয়টি আগে থেকেই জানি আবার অনেকেই আছি যে মসুর ডাল এবং মধু দিয়েও যে পরিষ্কার রাখা যায় এটা আজকে নতুন শুনলাম। তবে তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, হ্যাঁ সত্যিই তাই মধু এবং মসুর ডাল দিয়ে আপনি ঘরোয়া ভাবে আপনার ত্বককে পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল রাখতে পারবেন।
শুধু এর জন্য আপনাকে কিছু ফর্মুলা মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি এই ফেসপ্যাক তৈরি করা জানতে হবে। মসুর ডাল এবং মধু দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করার জন্য প্রথমে আপনাকে কিছু পরিমাণ মসুর ডাল একটি বাটিতে নিয়ে এক রাত্রি পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরদিন সকালে সেই পানিটি ফেলে দিয়ে সেই মসুর ডাল গুলো ভালো করে পিষে নিতে হবে। তারপর এর মধ্যে পরিমাণ মতো মধু দিয়ে ভালোভাবে মেশাতে হবে যাতে পেস্টের ন্যায় আকার ধারণ করে। মসুর ডাল এবং মধু খুব ভালোভাবে মেশানোর পরে সেটি আপনার ত্বকে লাগিয়ে দিতে হবে।
তকে লাগানোর পরে কিছু সময় অপেক্ষা করবেন এবং এটি ত্বকের সাথে শুকিয়ে গেলে অল্প কিছুক্ষণ পরে সেটি ধুয়ে ফেলতে হবে। দেখবেন আপনার ত্বক আগের চেয়ে অনেক ভালো নরম এবং কোমল মনে হবে। এর সাথে সাথে ত্বক উজ্জ্বল দেখাবে। এভাবে বেশ কয়েকদিন ব্যবহার করলে সত্যিই ত্বক উজ্জ্বল এবং সফট হবে। এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহারের ফলে ত্বকে জমে থাকা ময়লা এবং তেল চর্বি পরিষ্কার করতেও সাহায্য করে। আশা করি মসুর ডাল এবং মধুর ফেস প্যাক কিভাবে তৈরি করে ব্যবহার করবেন সে বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা
এখন আমরা মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার বিষয়টি জানবো। এতদিন আমরা জানতাম মসুর ডাল শুধু খেতেই হয়। কিন্তু আমরা কি এটা জানতাম যে মসুর ডাল খাওয়ার পাশাপাশি রূপচর্চাতেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যারা রূপচর্চায় অধিক আগ্রহী তারা বিষয়টি জানলেও অধিকাংশ মানুষই এই বিষয়টি জানেনা যে মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করা যায়। তো চলুন যারা আমরা এ বিষয়টি জানিনা তাহলে বিষয়টি ভালো মতো জেনে নেওয়া যাক। মসুর ডাল খেলে যে কতটা উপকার হয়ে থাকে তা তো আর আপনাদের বলতে হবে না।
আরো পড়ুনঃ শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে
কিন্তু এটি ত্বকে ব্যবহারেও বেশ ভালো উপকার পাওয়া যায়। রূপচর্চায় মসুর ডাল ব্যবহার খুবই উপকারী ভূমিকা পালন করে। এর উপকার পেতে হলে আপনাকে সপ্তাহে অন্তত এক থেকে দুইবার ব্যবহার করতে হবে। রূপচর্চায় মসুর ডাল ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু পরিমাণ মসুর ডাল পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর সেটি পেস্ট তৈরি করতে হবে। তারপর এর মধ্যে একটু হলুদ বাটা এবং কিছু পরিমাণ দুধ ভালো ভাবে মিশাতে হবে। এমন ভাবে এই উপাদানগুলোকে মিশাতে হবে যাতে সকলগুলো মিশ্রণ একত্রে হয়ে যায়। এই মিশ্রণটি তৈরি হওয়ার পর সেটি আপনার মুখে ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে।
এটি মুখে ম্যাসাজ করার পর ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এরপর যখন এটি শুকিয়ে যাবে তখন পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুতে হবে। তারপর দেখবেন আপনার ত্বক থেকে কালো দাগ কমে যাবে পাশাপাশি ত্বক মসৃন হবে। আর ত্বক সুন্দর এবং উজ্জ্বল দেখাবে। প্রতি সপ্তাহে এভাবে এক থেকে দুইবার ব্যবহার করবেন। দেখবেন আপনার ত্বক আস্তে আস্তে সুন্দর হয়ে যাচ্ছে। এটি একদম প্রাকৃতিক হওয়ায় কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। যেটা আমাদের ত্বকের জন্য খুবই ভালো এবং উপকারী। আশা করছি মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করার নিয়মটি বুঝতে পেরেছেন। আপনি চাইলে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। আশা করি ভালো ফল মিলবে।
শুধু মসুর ডাল মুখে দিলে কি হয়
শুধু মসুর ডাল মুখে দিলে কি হয় এটি আজকের আর্টিকেলের প্রধান আলোচ্য বিষয়। আমরা এখন জানবো মসুর ডাল মুখে দিলে কি হয় এই বিষয়টি সম্পর্কে। উপরের আলোচনাগুলো থেকে এটা বুঝতে পেরেছেন যে মসুর ডাল আমাদের জন্য কতটা উপকারী। মসুর ডালকে শুধু খাওয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় না বরং মসুর ডাল দিয়ে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যাও দূর করা যায়। মসুর ডাল দিয়ে অনেকেই ফেসপ্যাক তৈরি করে ব্যবহার করে। মসুর ডাল দিয়ে ফেসওয়াশ তৈরি করে ব্যবহার করার ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং কোমল দেখায়। অনেকের ব্রণের সমস্যার জন্য ত্বকে দাগ সৃষ্টি হয়। এই দাগকে দূর করার জন্য মসুর ডাল মুখে ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ গিয়ার সাইকেল দাম কত বাংলাদেশ ছবিসহ ২০২৩
মসুর ডালকে পিষে এর সাথে মধু এবং অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে দিলে আপনার মুখের দাগ দূর হয়ে যাবে। তাছাড়া যাদের মুখে তৈলাক্ততা সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও মসুর ডাল বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ত্বকের তৈলাক্ততা সমস্যা দূরীকরণেও মসুর ডাল খুবই উপকারী ভূমিকা পালন করে। আবার অনেককে দেখা যায় ত্বকে প্রোটিনের ঘাটতির জন্য ত্বক অস্বাভাবিক দেখায়। মসুর ডাল ব্যবহারে মুখের ত্বকে প্রোটিন ফিরে আসে এবং ত্বক উজ্জ্বল এবং লাবণ্যময় দেখায়। মসুর ডাল মুখে ব্যবহার করলে আপনি এই উপকারগুলো পাবেন। আশা করছি এখন মসুর ডাল মুখে দিলে কি হয় এ বিষয়টি পরিপূর্ণ ভাবে বুঝতে পেরেছেন।
শেষ কথা
আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে শুধু মসুর ডাল মুখে দিলে কি হয় এই বিষয়টি আপনাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। এর সাথে সাথে মসুর ডালের আরো অনেক উপকারীর দিক সম্পর্কেও আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা পুরোপুরি বুঝে ফেলেছেন মসুর ডাল মুখে মাখলে কি হয়। এতসব আলোচনার মধ্যে আপনি যদি কোন বিষয় বুঝতে না পারেন তাহলে অবশ্যই আমাদের জানাবেন। আমরা চেষ্টা করব আপনার সমস্যার সমাধান করার জন্য। আর এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি মনে হয় এতটুকুও উপকার হয়েছে তাহলে অবশ্যই বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আর নিত্য নতুন সব স্বাস্থ্য টিপস ও আপডেট খবর পেতে চাইলে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
FAQ (মসুর ডাল সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর)
প্রশ্ন: শুধু মসুর ডাল মুখে দিলে কি হয়?
উত্তর: শুধু মসুরের ডাল ব্যবহার করে তৈরি করা ফেসপ্যাক মুখে লাগালে এটি ত্বকের প্রোটিনের ঘাটতি দূর করে ফেলে। ফলে ত্বকের রুক্ষত দূর হয়ে, ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরে আসে।
প্রশ্ন: মসুর ডাল বাটা মুখে দিলে কি হয়?
উত্তর: সপ্তাহে অন্তত ২ বার মসুর ডাল বাটা ও দুধ পেস্ট করে মুখে লাগালে মুখের যাবতীয় অযাচিত ব্রণের দাগ দূর হতে শুরু করে।
প্রশ্ন: মসুর ডাল প্রোটিন নাকি কার্বোহাইড্রেট?
উত্তর: মসুর ডালে জটিল প্রকৃতির কার্বোহাইড্রেট অধিক পরিমাণে থাকে এবং চর্বি ও ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম থাকে। তাছাড়াও মসুর ডালে উচ্চমাত্রায় প্রোটিনও রয়েছে।
প্রশ্ন: মসুর ডালে প্রোটিনের পরিমাণ কত?
উত্তর: মসুর ডালে প্রতি ১০০ গ্রামে অন্তত ২৬ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। তাছাড়াও মসুর ডালে পচুর পরিমাণে ফাইবার ও ক্যালসিয়াম উপস্থিত আছে, যা দেহ গঠনের জন্য উপযোগী।
প্রশ্ন: মসুর ডাল কি ক্ষতিকর?
উত্তর: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মসুর ডাল উপকারী হলেও কাঁচা মসুর ডাল খাওয় কিংবা ব্যবহারের ফলে মসুরে ডালে থাকা ল্যাকটিন দেহের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
প্রশ্ন: কোন মসুর ডালে প্রোটিন বেশি?
উত্তর: কালো মসুর ডালে সবচেয় বেশি পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রণ সহ অন্যান্য দরকারী পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে।
প্রশ্ন: মসুর ডাল কি ত্বকের জন্য ভালো?
উত্তর: অবশ্যই, মসুর ডাল ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। মসুর ডালে থাকা উপাদানগুলো চমৎকার ত্বক উজ্জ্বলকারী হিসাবে কাজ করে। ফলে ত্বকের মলিনতা দূর হয়ে, ত্বক প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
প্রশ্ন: মসুর ডাল খেলে কি মোটা হয়?
উত্তর: না, অল্প পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট থাকার দরুন মসুর ডাল খেলে মোটা হওয়া যায়না। বরং ওজন স্বাভাবিক রাখতে মসুর ডাল খাওয়া হয়।
অনির্বাণ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url