শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে
আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে সে উপায় গুলো সম্পর্কে। আপনি যদি জানতে চান, শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে তার উপায় কি তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন। দেরী না করে চলুন তাহলে দেখে নিই শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে তার পদ্ধতি গুলো কি কি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে
ভূমিকা - অ্যাজমা কী?
অ্যাজমা মূলত শ্বাসকষ্টের কারণে সৃষ্ট ফুসফুসের একটি সংক্রমণজনিত রোগ। অ্যাজমা সমস্যা যেকোনো বয়সের মানুষের যেকোনো সময় হয়ে থাকে, তবে শীতকাল অ্যাজমা রোগীদের জন্য বেশ বিপদজনক একটি সময়। বছরের অন্যান্য সময়ের থেকে শীতকালে অ্যাজমা রোগীদের অনেক বেশি সতর্ক হয়ে চলতে হয়। কারণ শীতকালে অ্যাজমা রোগীদের সমস্যা বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন উপসর্গ দেখে অ্যাজমা রোগ চিহ্নিত করা যায়।
অ্যাজমা হলে শ্বাসকষ্ট বুকে ব্যথার সহ বিভিন্ন শারীরিক অসুবিধা পরিলক্ষিত হয়। পৃথিবীতে প্রায় ২০ কোটি মানুষ প্রতিনিয়ত অ্যাজমার সমস্যায় ভুগছে। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৫০ হাজারের অধিক মানুষ হাঁপানি বা অ্যাজমা দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে। শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে তার কয়েকটি পদ্ধতি আজ আমরা জেনে নেব। শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে সে পদ্ধতি গুলো নিচে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হলো।
অ্যাজমার লক্ষণ ও কারণ
শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে সে বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার পূর্বে অ্যাজমার লক্ষণ ও কারণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
অ্যাজমার লক্ষণঃ
- শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ করতে অত্যন্ত কষ্ট হয়।
- বুকের অভ্যন্তরে বাঁশির মতো সাঁই সাঁই শব্দ হয়।
- বুক অত্যন্ত ভারী অনুভূত হয়।
- ঢোক গেলার সময় ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
- দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত উপক্রম হয়।
- ঘন ঘন কাশি হতে থাকে।
- অতিরিক্ত হৃদ স্পন্দন, বুক ধরফর করা ও মাথাব্যথা।
- সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা বা ভারী কাজ করলে কফ বেড়ে যাওয়া।
অ্যাজমার কারণঃ
- বংশগত কারণে এলার্জির সমস্যা থাকলে খুব সহজে অ্যাজমা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ঠাণ্ডা ও আদ্র আবহাওয়া সহ্য করতে না পারলে।
- ঘরে থাকা ধুলাবালি, ফুলের রেনু, অস্বাস্থ্যকর কালো ধোঁয়া, পশু পাখির লোম ইত্যাদির প্রভাবে। তাই ঘরে থাকা পোষা প্রাণীদেরকেও নিয়মিত গোসল করাতে হবে।
- চিৎকার, হাসি, কান্না আবেগ ইত্যাদি কারণেও এজমা হতে পারে।
- ফুসফুসের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া।
- কোন নির্দিষ্ট খাবার খেলে এলার্জি সৃষ্টি হওয়ার কারণে।
- ধুমপান বা অন্য কোন কারণে ফুসফুসের সংক্রমণ ঘটলে।
শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে
শীতকাল অ্যাজমা রোগীদের জন্য খুবই বিপদজনক। কারণ অ্যাজমা বৃদ্ধি পায় সবথেকে বেশি ঠান্ডা খাবার বা ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে। আর শীতকাল যেহেতু তাপমাত্রা অত্যাধিক কমে যায় তাই অ্যাজমা রোগীদের জন্য বেশ কষ্টকর একটি সময় হলো শীতকাল। এ সময় অ্যাজমা রোগীদের অনেক বেশি কষ্ট ভোগ করতে হয়।
অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন না করলে তাদেরকে শ্বাসকষ্টের সমস্যায় পড়তে হয়। আজকে আপনাদেরকে শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে তার কয়েকটি কার্যকর পদ্ধতি জানাব। আসুন তাহলে দেখে নেই, শীতকালে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনারা কি ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করবেন।
১) শরীর আবৃত রাখুনঃ শীতকালে নিজেকে সুস্থ রাখতে হলে সব সময় শরীর ভালোভাবে পোশাক দ্বারা আবৃত করে রাখুন। এর কারণ শীতকালে আবহাওয়া অত্যন্ত ঠান্ডা হয়, বিশেষ করে সকালবেলায় বেশ কুয়াশা দেখা দেয়। যেটি একজন অ্যাজমা রোগীর জন্য খুবই বিপদজনক। আর তাই বাইরে বের হতে হলে অবশ্যই ভালো ভাবে শরীর আবৃত করে বের হবেন। খেয়াল রাখবেন শীতের ঠান্ডা বাতাস যেন আপনার নাক ও মুখ দিয়ে আপনার শরীরের ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে।
২) গরম খাবার ও গরম পানি পানঃ অনেকেই বলে শীতকালে মজা করে খাবার খাওয়া যায়। কিন্তু এটি একজন স্বাভাবিক ব্যক্তির জন্য যতটা সহজ, ঠিক ততটাই একজন অ্যাজমার রোগীর জন্য কঠিন। এর কারণ হলো শীতকালে অ্যাজমা রোগী কখনোই ঠান্ডা খাবার খেতে পারবে না। শুধু ঠান্ডা খাবারই নয় ঠান্ডা পোশাকও পরিধান করতে পারবেনা। তাদেরকে সব সময় গরম গরম খাবার এবং উষ্ণ গরম পানি পান করতে হবে। ঠান্ডা পানি পান করলে অথবা ঠান্ডা খাবার খেলে অ্যাজমার সমস্যা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। অতএব, সব ধরনের ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলুন।
৩) ধুলাবালি থেকে দূরে থাকুনঃ শীতকালে তাপমাত্রা ও আদ্রতা কমে যায়। সেই সাথে বায়ুমণ্ডল শুষ্ক হয়ে পড়ে ফলে বেড়ে যায় ধুলাবালির প্রকোপ। আর তাই যত সম্ভব ধুলাবালি থেকে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করুন। এর পাশাপাশি শরীর এবং হাত সবসময় পরিষ্কার রাখুন, এজন্য কুসুম গরম পানি ব্যবহার করবেন। বাহিরে থেকে এসে গরম পানি দিয়ে গোসল করার চেষ্টা করবেন। নিজের বিছানা এবং ঘরের আসবাবপত্র যথাসম্ভব পরিষ্কার করে রাখবেন।
৪) ফুলের ঘ্রাণ থেকে দূরে থাকুনঃ শীতকালে আমরা চারিদিকে বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন ফুল দেখতে পাই। তবে অ্যাজমা রোগীদের জন্য ফুল দেখেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে হবে, তাদের কখনোই ফুলের ঘ্রাণ নেওয়া যাবে না। কারণ বিভিন্ন রকম ফুলে এলার্জিজনিত সমস্যা থাকে, এই সমস্ত ফুলের সুবাস বা ঘ্রাণ নেওয়ার ফলে অ্যাজমার সমস্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। আর তাই অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে, যে কোন ফুলের ঘ্রাণ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫) শরীরচর্চা করুনঃ নিয়মিত শরীর চর্চার করলে ফুসফুসের শক্তি বৃদ্ধি পায়। শীতকালে শরীর অনেকটা ঠান্ডা হয়ে যায়, শরীরকে গরম রাখার জন্য তাই চেষ্টা করবেন হাটাহাটি করার। শীতকালে নিজের শরীর গরম রাখতে এবং ফুসফুসের শক্তি বৃদ্ধি করতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ব্যায়াম করুন। তবে ব্যায়াম করার সময় অবশ্যই নাক, কান ঢেকে রাখবেন। নাক, কান ও মুখের মাধ্যমে যেন ফুসফুসে বাতাস প্রবেশ করে আপনার শরীরের কোন ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। ডাক্তারদের ভাষ্যমতে নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে অ্যাজমা সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সেই সাথে মানসিক চাপ ও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা পরিহার করতে হবে।
৬) অ্যাজমা প্রতিরোধী খাবার গ্রহণ: ফ্রিজে রাখা যে কোন খাবার, আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিংকস ইত্যাদি থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকতে হবে। প্রতিটি খাবার গরম করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত ফলমূল ও শাকসবজি অধিক পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার, কলিজা, মধু, কালো জিরা, গাজর, টমেটো ইত্যাদি শীতকালীন মৌসুমী খাবার খেলে অ্যাজমা অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
৭) এলার্জি থেকে সাবধান থাকুনঃ অ্যাজমার রোগীদের সাধারণত বিভিন্ন রকম খাবারে কিংবা পশু প্রাণীর লোমে এলার্জি সমস্যা থাকে। যে সমস্ত খাবার অথবা বস্তুতে অ্যালার্জি সমস্যা থাকে, অবশ্যই সে সমস্ত বিষয়গুলো এড়িয়ে চলবেন এর ফলে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। আশা করি পোস্টের এই অংশটি পড়ে আপনারা শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে তার কৌশল সমূহ শিখে ফেলেছেন।
অ্যাজমা রোগী ধুলাবালি থেকে যেভাবে বাঁচাবেন নিজেকে
শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে তার আংশিক ধারণা আপনারাই ইতোমধ্যে পেয়েছেন। ধুলাবালি প্রত্যেকটি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যই অনেক ক্ষতিকর, তবে অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীদের জন্য খুব বেশি সমস্যার কারণ এই ধুলাবালি। অ্যাজমা রোগীদের সামান্য একটু ধুলাবালির সংক্রমণে অ্যাজমা সমস্যাটি প্রচুর বৃদ্ধি পায়। আজ আপনাদের জানাব, অ্যাজমা রোগী ধুলাবালি থেকে কিভাবে নিজেদের বাঁচাবেন তার কয়েকটি পদ্ধতি সম্পর্কে। তাই আসুন জেনে নেই এজমা থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় গুলো।
১) মুখে মাক্স ব্যবহারঃ অ্যাজমা রোগীদের ক্ষেত্রে বাইরে বের হলে অবশ্যই, মুখে কাপড় অথবা ফিল্টার মাক্স ব্যবহার করে বের হতে হবে। সেই সাথে চোখ সুরক্ষিত রাখতে হলে, চোখে সানগ্লাস ব্যবহার করুন। কারণ বিভিন্ন ধুলাবালির কণাগুলো জমা হয়ে, সেগুলো নাক মুখ দিয়ে ফুসফুসে পৌঁছে যায়।
আরো পড়ুনঃ গিয়ার সাইকেল দাম কত বাংলাদেশ ছবিসহ ২০২৪
সেইসাথে ধূলিকণা গুলো আমাদের চোখেও প্রবেশ করে, এর ফলে আমাদের চোখের ক্ষতি হয়। আর তাই বাইরে বের হওয়ার পূর্বে অবশ্যই ফিল্টার মাক্স ব্যবহার করুন। পারলে মুখে কাপড় দিয়ে নিন এবং সেই সাথে চোখে সানগ্লাস ব্যবহার করতে পারেন।
২) নিয়মিত পোশাক পরিষ্কার করুনঃ বিভিন্ন রকম ধুলাবালির প্রকোপে আমাদের শরীরের যেমন ক্ষতি হয়। তার পাশাপাশি আমাদের পোশাক-আশাক গুলো অনেক ময়লা এবং জীবাণুতে পূর্ণ হয়ে যায়। অ্যাজমা রোগীদের ক্ষেত্রে সব সময় নিজেদেরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করতে হবে। আর তাই প্রতিদিনের ব্যবহার করা পোশাকগুলো সাবান দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন। যে সমস্ত কাপড় ধোয়া সম্ভব না, প্রতিদিন সেগুলো অন্ততপক্ষে রোদে দিয়ে রাখুন।
৩) কালো ধোঁয়া থেকে সাবধানঃ অ্যাজমা রোগীদের জন্য ধুলাবালির পাশাপাশি যানবাহনের কালো ধোয়া অনেক ক্ষতিকর, এতে করে অ্যাজমার সমস্যা বৃদ্ধি পায়। এই কালো ধোয়া কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সাথে মিশে আমাদের ফুসফুসে প্রবেশ করে। এর ফলে যেমন অ্যাজমার সমস্যা বৃদ্ধি পায়, তার পাশাপাশি ক্যান্সারের ঝুঁকিও সৃষ্টি হয়। আপনারা জানলেন অ্যাজমা রোগী ধুলাবালি থেকে যেভাবে বাঁচাবেন নিজেকে তার কয়েকটি নিয়ম। শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে এটি পুনরায় জেনে নেওয়ার জন্য পোস্টটি শুরু থেকে আবারো পড়ে নিতে পারেন।
শীতে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণের উপায় | শীতে হাঁপানি প্রতিরোধের উপায়
অ্যাজমা রোগীদের সমস্যা বছরের পুরো সময়ই হয়ে থাকে, তবে সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় শীতের সময়। এসময় চারদিকের আবহাওয়া অনেক ঠান্ডা থাকে ও শরীর খুব দ্রুত ঠান্ডা হয়ে আসে। খাবার, পানি, এমনকি পোষাক-আশাক, বিছানা সবকিছুই ঠান্ডা হয়ে যায়। এর ফলে অ্যাজমার রোগীদের অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। আজ আপনাদের জানাব শীতে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণের উপায় সম্পর্কে। আসুন তাহলে দেখি শীতে হাঁপানি প্রতিরোধের উপায় গুলো কি কি।
সবকিছু পরিষ্কার রাখা: ধুলোময়লা প্রত্যেকটি ব্যক্তির শরীরের জন্য ক্ষতিকর, এর থেকে বেশি ক্ষতিকর অ্যাজমা রোগীর জন্য। আর তাই পারত পক্ষে চেষ্টা করতে হবে, সব সময় ধুলাবালি এড়িয়ে চলার। চেষ্টা করতে হবে শোবার ঘর এবং আশপাশ গুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে। সব সময় নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জায়গায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। ঘরে কার্পেট ব্যবহার করা যাবে না কারণ এটি অধিক ধুলাবালি জমিয়ে রাখে।
চিরতরে ধূমপান ত্যাগ করা: ধূমপান সকলের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তবে অ্যাজমা রোগীদের ক্ষেত্রে ধূমপান আরো বেশি মারাত্মক। সাধারণভাবে ধূমপান করার কারণে আমাদের কাশির সমস্যা দেখা দেয়। শীতকাল এমনিতেই ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য বিভিন্ন রকম অসুখ-বিসুখ হয় এর মধ্যে কাশির সমস্যা বৃদ্ধি পায়। আর সেই সাথে ধূমপানের কারনে কাশির সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সচেতনতার অংশ হিসেবে তাই শীতে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে অবশ্যই ধূমপান পরিত্যাগ করুন।
রুম হিটার ব্যবহারে সতর্কতা: শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে তার অংশ হিসেবে শীতকালে সাধারণত আমরা শরীরে গরম পোশাক পরিধান করে থাকি ও এর পাশাপাশি রুম হিটার ব্যাবহার করি। তবে এক্ষেত্রে অনেকেই আমরা একটু ভুল করি সেটি হল, রুমে রুম হিটার ব্যবহার করে হঠাৎ করেই ঘর থেকে বের হয়ে পড়ি। এর ফলে শরীরের মধ্যে হঠাৎ ঠান্ডা প্রবেশ করে আবার ঠান্ডা শরীরে হঠাৎ করেই রুমে প্রবেশ করলে শরীরের মধ্যে হঠাৎ করেই গরম অনুভব হয়। এভাবে একবার অতিরিক্ত গরম একবার অতিরিক্ত ঠান্ডা দুটি বিষয় একত্রে ঘটার কারণে অ্যাজমার সমস্যা বৃদ্ধি পেয়ে যায়। রুমে রুম হিটার ব্যবহার করার সময় চেষ্টা করতে হবে ঘর থেকে বের হওয়ার ২০ থেকে ২৫ মিনিট পূর্বে রুম হিটার বন্ধ করতে। এবং আস্তে আস্তে রুম যখন স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসবে তখন রুম থেকে বের হতে। এতে করে অ্যাজমা সমস্যা বাড়বে না।
অ্যাজমার হোমিও ঔষধ | অ্যাজমা রোগের ঔষধ
শীতকালে যেভাবে অ্যজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে তার বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনারা ইতোমধ্যে অবগত হয়েছেন। এবার আপনাদের সামনে অ্যাজমার হোমিও ঔষধ কোনগুলো সে বিষয়টি জানিয়ে দিব। অ্যাজমা হলে সাধারণত ডাক্তাররা স্টেরয়েড জাতীয় জাতীয় ঔষধ, ইনহেলর ব্রোঙ্কোডাইলেটর সাজেস্ট করে থাকেন। তবে হাঁপানির ক্ষেত্রে হোমিও ঔষধ গুলো দীর্ঘমেয়াদি উপশম প্রদান করে।
- Aconite: যারা তীব্র এজমা বা হাঁপানির সমস্যায় দীর্ঘদিন যাবৎ ভুগছেন তাদের জন্য হোমিওপ্যাথি একোনাইট ঔষধটি হতে পারে এক দারুণ প্রতিষেধক। ঠান্ডার সময় রোগীদের বুকে চাপ ধরা ও অতিরিক্ত সর্দি কাশি প্রতিরোধে এই ওষুধটি ডাক্তারে পরামর্শ মোতাবেক সেবন করতে পারেন।
- Natrum sulphuricum: শিশুদের হাঁপানি রোগ হলে এই ওষুধটি ডাক্তাররা প্রয়োগ করে থাকেন। অতিরিক্ত আদ্র আবহাওয়ার কারণে অ্যাজমা সমস্যা বেড়ে গেলে এ ওষুধটি খাওয়া যেতে পারে।
- Baccilinum: অ্যজমা রোগীদের কাছে এই ওষুধটি অত্যন্ত পরিচিত। শীতের রাতে হাঁপানির শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ করার জন্য এই ওষুধের কার্যকারিতা অনেক বেশি।
শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবেঃ শেষ কথা
স্বাভাবিকভাবেই শীতকালে অ্যাজমা রোগীদের বেশি সতর্ক থাকতে হয়। কারণ অ্যাজমা সমস্যা বৃদ্ধি পায় ঠান্ডা লাগার কারণে। আর তাই শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে সে বিষয় গুলো সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় জেনে রাখা অতীব জরুরী। এছাড়াও শীতে অ্যাজমা রোগ কেন হয় এ বিষয়টি জানা থাকলে অ্যাজমা বা হাঁপানির বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহজতর হয়। আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি শীতকালে যেভাবে অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে থাকবে তার বেশকিছু উপায় সম্পর্কে ও অ্যাজমা রোগী ধুলাবালি থেকে যেভাবে বাঁচাবেন নিজেকে।
আরো পড়ুনঃ মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং করার উপায় ২০২৪
সেই সাথে শীতে হাঁপানি প্রতিরোধের উপায় আমরা সহজ ভাষায় আপনাদের জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। পোস্টে উল্লেখিত বিষয়ে আপনাদের কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে অবশ্যই মন্তব্য করতে পারেন। আশা করি পোস্টে বর্ণিত বিষয়গুলো এজমা থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় হিসাবে আপনাদের যথেষ্ট কাজে আসবে । আর স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন আপডেটেড পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে ভুলবেন না। শীতে হাঁপানি প্রতিরোধের উপায় অন্যদেরকে জানাতে চাইলে এই পোস্টটি এখনই সর্বত্র শেয়ার করে ফেলুন।
FAQs (অ্যাজমা বা হাঁপানি সংক্রান্ত সাধারণ প্রশ্নোত্তর)
প্রশ্ন: অ্যাজমা কি পুরোপুরি ভালো হয়?
উত্তর: একবার অ্যাজমার সমস্যা সৃষ্টি হলে তা পুরোপুরিভাবে ভালো করা সম্ভব নয়। তবে বিশেষ কিছু পদ্ধতি ও সঠিক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে এজমা সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
প্রশ্ন: অ্যাজমা কি ছোঁয়াচে রোগ?
উত্তর: অ্যাজমা বা হাঁপানি ছোঁয়াচে রোগ নয়। এটি একজনের দেহ থেকে কখনোই অন্যজনের দেহে সংক্রমিত হয় না। শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন সংক্রমণের কারণেই মূলত অ্যাজমা সৃষ্টি হয়ে থাকে।
প্রশ্ন: অ্যাজমার লক্ষণ কি কি?
উত্তর: অ্যাজমার বিভিন্ন লক্ষণ রয়েছে যেমন: বুকের ভেতর শো শো শব্দ হওয়া, অত্যাধিক সর্দি কাশি হওয়া, বুকে চাপ অনুভব করা, স্বল্প মাত্রায় শ্বাস গ্রহণ করতে পারা ইত্যাদি। ব্যক্তিভেদে অ্যাজমার বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পায়। অনেক সময় ভারী কোন কাজ করলে বা খেলাধুলা করলে অ্যাজমা বেড়ে যেতে পারে।
প্রশ্ন: অ্যাজমা বা হাঁপানির কারণ গুলি কি কি?
উত্তর: অতিরিক্ত ঠান্ডা আবহাওয়া, পরিবেশ দূষণ, এলার্জি, শ্বাসকষ্ট, সর্দি কাশির ভাইরাসের আক্রমন, ফুসফুসের সংক্রমণ ইত্যাদি কারণেই মূলত অ্যাজমা বা হাঁপানি সৃষ্টি হয়ে থাকে।
প্রশ্ন: হাঁপানি হলে এন্টিহিস্টামিন খাওয়া যাবে না কেন?
উত্তর: অ্যান্টিহিস্টামিন গুলো হাঁপানি বা অ্যাজমার ক্ষেত্রে বর্জন করাই শ্রেয়। কেননা এন্টিহিস্টামিন শ্বাসযন্ত্রের নালীর নিঃসরণকে শুকিয়ে দিয়ে ফুসফুসের ক্ষতি করে ফেলতে পারে।
প্রশ্ন: হাঁপানির জন্য কোন পানীয় ভালো?
উত্তর: এজমা বা হাঁপানির জন্য বিভিন্ন চা যেমন: আদা চা, লেবু চা, মৌরি চা, সবুজ চা ইত্যাদি হতে পারে আদর্শ পানীয়।
অনির্বাণ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url